মেঘালয়ে হানিমুন করতে গিয়ে বরকে নৃশংসভাবে হত্যা, স্ত্রী সোনমসহ পাঁচ আসামি শিলংয়ে হাজির

ভারতের মেঘালয় রাজ্যে হানিমুনের ছলনায় স্বামীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন নববিবাহিত স্ত্রী সোনম রঘুবংশী। তার সঙ্গে আরও চার অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১০ জুন) গভীর রাতে গাজিপুর থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে এনে তাদের শিলংয়ে আনা হয়। আজ বুধবার (১১ জুন) সোনমসহ পাঁচ আসামিকে আদালতে তোলা হচ্ছে।

১৭ দিন পর আত্মসমর্পণ করেন সোনম

উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে ১৭ দিন নিখোঁজ থাকার পর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন সোনম। গত ৯ জুন তাকে গ্রেফতার করে নন্দগঞ্জ থানার পুলিশ। পরে তাকে শিলংয়ে নিয়ে আসার জন্য আদালতে ট্রানজিট রিমান্ড চাওয়া হলে, সেটি অনুমোদন করে আদালত। এরপরই মঙ্গলবার রাতে মেঘালয়ে আনা হয় প্রধান অভিযুক্ত সোনমসহ বাকিদের।

মেঘালয় পুলিশের জোর তদন্ত, চার্জশিট দাখিলের প্রস্তুতি

পূর্ব খাসি হিলস জেলার পুলিশ সুপার বিবেক সিয়াম জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট দাখিলের প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, “মাত্র সাত দিনের মধ্যেই আমরা দৃঢ় প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। তদন্ত দ্রুত এগোচ্ছে।”

সোনমকে মঙ্গলবার রাতেই শারীরিক পরীক্ষার জন্য শিলংয়ের গনেশ দাস হাসপাতালে নেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আদালতে রিমান্ড চাইবে মেঘালয় পুলিশ, যাতে হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়। এমনকি খুনের স্থানেও তাকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রেমিকের পরিকল্পনায় নির্মম হত্যাকাণ্ড

তদন্তে উঠে এসেছে, সোনমের কথিত প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা কখনোই শিলংয়ে যাননি। তিনি ফোনে নির্দেশনা দিয়ে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। চেরাপুঞ্জিতে পৌঁছে সোনম স্বামী রাজা রঘুবংশীকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে তিনজন ভাড়াটে খুনি মিলে রাজাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

হানিমুন ট্র্যাজেডি: ২১ মে যাত্রা, ২৩ মে শেষ দেখা

বিয়ের পর গত ২১ মে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে হানিমুন করতে যান রাজা ও সোনম। তাদের শেষবার একসঙ্গে দেখা যায় ২৩ মে। এরপর দুজনই নিখোঁজ ছিলেন প্রায় ১০ দিন। ২ জুন চেরাপুঞ্জির এক জলপ্রপাতের কাছে গভীর খাদ থেকে রাজার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের চিত্র।

গ্রেপ্তার পাঁচজন: স্ত্রী, প্রেমিক ও ভাড়াটে খুনিরা

ঘটনার তদন্তে নেমে মেঘালয় পুলিশ সোনম, তার প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা এবং হত্যাকাণ্ডে যুক্ত তিন ভাড়াটে খুনিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *