বাংলা ছোট ও বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানিন সুবহার অকাল মৃত্যু নিয়ে অবশেষে সামনে এসেছে বিস্তারিত তথ্য। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তানিনের মৃত্যুর সময় পাশে থাকা গণমাধ্যমকর্মী রনজু সরকার সময় সংবাদকে জানিয়েছেন, কিডনি বিকল এবং মানসিক চাপই ছিল মৃত্যুর মূল কারণ।
হঠাৎ অসুস্থতা, দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া
২ জুন (রবিবার) হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তানিন সুবহা। তখন দ্রুত তাকে রাজধানীর আফতাবনগরের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং তিনি স্ট্রোক করেন, যার ফলে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
কিডনি ছিল প্রায় অকেজো, এক সপ্তাহ লাইফ সাপোর্টে
রনজু সরকার জানান, তানিনের দুটি কিডনি প্রায় সম্পূর্ণভাবে অকেজো হয়ে গিয়েছিল। স্ট্রোকের পর হার্ট কিছুটা সচল থাকলেও ব্রেইনের কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেন। এরপর একটানা প্রায় এক সপ্তাহ লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাকে।
‘ক্লিনিক্যালি ডেথ’ ঘোষণা, অবশেষে চিরবিদায়
৮ জুন চিকিৎসকরা ঘোষণা করেন যে, তানিনের মস্তিষ্কের ৯৯ শতাংশই অকেজো হয়ে গেছে, অর্থাৎ তিনি ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’। এরপর মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৫৭ মিনিটে তার স্বামীর সম্মতিতে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। মাত্র ৩০ বছর বয়সে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই প্রতিভাবান অভিনেত্রী।
তানিনের ব্যক্তিগত জীবন: ব্যর্থতা, সংগ্রাম ও একাকীত্ব
মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম বিয়ের মাধ্যমে সংসারজীবনে প্রবেশ করেন তানিন। প্রথম সংসারে এক কন্যাসন্তান থাকলেও দাম্পত্য জীবন টেকেনি। এরপর আরেকজনকে (একজন পাইলট) ভালোবেসে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন, যার ঘরে রয়েছে মাত্র দেড় বছরের একটি কন্যাসন্তান। দুই কন্যাসন্তান নিয়ে একাকী ও মানসিক চাপে ভোগা জীবন ছিল তার নিত্যসঙ্গী।
ভাইরাল হয়েছিল মৃত্যুর আগের পোস্ট
মৃত্যুর আগে তানিন সুবহার করা একটি ফেসবুক পোস্ট—যেখানে তিনি ‘কুফরি’ বিষয়ক একটি অনুভূতির কথা লেখেন—তা ভাইরাল হয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়। এতে অনেকেই তার মানসিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।