এবারের ঈদুল আজহায় দেশে কোরবানির পশুর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কমেছে প্রায় ১৩ লাখ। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে কোরবানির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের চামড়া শিল্পেও।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য বলছে কমতির সত্যতা
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দেশে মোট ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু কোরবানি হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি। অর্থাৎ, এ বছর কোরবানির সংখ্যা কমেছে ১২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি।
চামড়া শিল্পে ধাক্কা
বাংলাদেশে কোরবানির সময় চামড়ার সংগ্রহ হয় মোট চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ। এ বছর কোরবানি কম হওয়ায় চামড়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শাখাওয়াত উল্লাহ। তিনি জানান, এবার প্রায় ১৫-২০ শতাংশ কম কোরবানি হয়েছে, যার ফলে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহ হতে পারে।
মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট
পশু বিক্রেতারা এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান বাজারমূল্য এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনেকেই এবার কোরবানি থেকে বিরত ছিলেন। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর জানিয়েছে, এ বছর প্রায় ৩৩ লাখ ১০ হাজার পশু অবিক্রীত থেকে গেছে।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমই) সাধারণ সম্পাদক মো. টিপু সুলতান বলেন, “২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের কোরবানির চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। অনেক রাজনৈতিক নেতা পলাতক থাকায় এবং আগের মতো আয়োজনে ঘাটতির কারণে কোরবানির সংখ্যা কমেছে। যারা গতবার ৫টি পশু দিয়েছিলেন, এবার তারা দিয়েছেন মাত্র একটি।”
বিভাগভিত্তিক কোরবানির পরিসংখ্যান
এবারের ঈদুল আজহায় সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগে। অন্যদিকে, ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ কোরবানি হয়েছে, যার পরেই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।