আপাতত স্থগিত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম: লন্ডনে চ্যাথাম হাউসে মন্তব্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে, জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

লন্ডনের প্রভাবশালী নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসে আয়োজিত এক সংলাপে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস। সফরের দ্বিতীয় দিনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর জনগণের মাঝে স্বস্তির ভাব লক্ষ্য করা গেছে।”

বিচারিক প্রক্রিয়া ও নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা

সংলাপে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস জানান, বিচার চলাকালীন এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে, আর এই বিচার সম্পন্ন হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই, যেহেতু জনগণ এই সরকারের উপর বিচারিক দায়িত্ব অর্পণ করেছে।

নির্বাচন ও প্রতিষ্ঠান সংস্কার নিয়ে অবস্থান

ড. ইউনূস বলেন, “জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আমরা নির্বাচন কমিশন, সংবিধান কমিশন ও সিভিল সার্ভিস কমিশন গঠন করেছি। এখন বিভিন্ন দলের সঙ্গে ঐকমত্য গড়ে তোলা আমাদের মূল লক্ষ্য।” তিনি জানান, এই কমিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত সুপারিশের ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও রাজকীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ

সফরের দ্বিতীয় দিনে ড. ইউনূস যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জোনাথন পাওয়েল-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়।

পরে তিনি চ্যাথাম হাউসের এশিয়া-প্যাসিফিক প্রোগ্রামের পরিচালক বেন ব্ল্যান্ড ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. চিয়েটিজ বাজপাই-এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

রাজা চার্লসের সঙ্গে পুনরায় সাক্ষাৎ

সন্ধ্যায় ড. ইউনূস সেন্ট জেমস প্যালেসে আয়োজিত রাজকীয় নৈশভোজে অংশ নেন, যা ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের ‘দ্য কিংস ফাউন্ডেশন’-এর ৩৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে রাজার সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, সামাজিক ব্যবসা, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে ড. ইউনূস ও রাজা চার্লস (তৎকালীন প্রিন্স) অতীতে একাধিকবার একত্রে কাজ করেছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *