বাংলাদেশ ক্রিকেটে দীর্ঘ সময় ধরে চলা দুর্বল পারফরম্যান্স ও বোর্ডের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা আজও সমাধানের মুখ দেখেনি। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নাজমুল হাসান পাপনকে সরিয়ে বিসিবির সভাপতি করা হয় ফারুক আহমেদকে, তবে মাত্র ৯ মাসের মাথায় তাকেও সরিয়ে নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
এই সময়েই আলোচনায় আসেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে বিসিবিতে কোনো পদ নেওয়ার ব্যাপারে তার অবস্থান একেবারেই ভিন্ন। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি বোর্ড পরিচালনা নিয়ে স্পষ্ট মতামত দিয়েছেন।
🗣️ “বোর্ডে গেলে ভালো করার জন্যই যাওয়া উচিত” – তামিম
সাক্ষাৎকারে তামিম বলেন,
“আমার বোর্ডে কোনো পদ নেওয়ার শখ নেই। যদি যাই, তাহলে দেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো করার মানসিকতা নিয়ে যাব। তবে যেভাবে বিসিবি চলছে, তাতে আমার যাওয়া উচিত হবে না বলেই মনে করি।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“অনেকে প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু বাস্তবে অনেক কিছু করা কঠিন। পরিবর্তনের কথা বলা সহজ, বাস্তবে প্রয়োগ করাই বড় চ্যালেঞ্জ। আমি গেলেও বলবো—ভালো করার চেষ্টা করবো, কিন্তু কোনো পদ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার নেই।”
🔄 নেতৃত্বে বারবার পরিবর্তন, চরম অস্থিরতা
২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক রদবদলের প্রভাব পড়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও। বিসিবির সভাপতিত্বে আসে বড় পরিবর্তন।
- পাপন বাদ, ফারুক আহমেদ সভাপতি
- মাত্র ৯ মাসের মধ্যে ফারুকও পদচ্যুত
- বোর্ডে আস্থা হারায় ৮ জন পরিচালক, যার জেরে বিদায় নেন ফারুক
তামিম মনে করেন, এমন পরিবেশে প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়।
🏏 “বোর্ড পরিচালক নয়, স্বাধীনতা পেলে কাজ করবো”
তামিমের মতে, কাজের স্বাধীনতা না থাকলে বোর্ডে কাজ করা অর্থহীন।
তিনি বলেন,
“বোর্ডে ২৫ জন পরিচালক থাকে। যদি ১০ জনের লক্ষ্য হয় নিজস্ব স্বার্থ রক্ষা, তাহলে সেটা পুরো সিস্টেমকে ব্যাহত করে। আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—একটি অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে দল হিসেবে কাজ করা।”
🔄 তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক: কার্যকর নয়
জাতীয় দলের বর্তমান নেতৃত্ব কাঠামো নিয়েও সরাসরি অসন্তোষ প্রকাশ করেন তামিম।
তিনি বলেন,
“তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক—আমার কাছে এটা কার্যকর মনে হয়নি। যে অবস্থা চলছে, সেখানে আরও বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে শান্তকে না জানিয়ে তাকে সরানোটা ছিল দুঃখজনক।”
🎯 ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: যদি সুযোগ মেলে
ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের নেতৃত্বে থাকলে কী করবেন—জানাতে গিয়ে তামিম তুলে ধরেন তার সুস্পষ্ট পরিকল্পনা:
- খেলোয়াড়দের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
- নির্বাচক ও কোচদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান
- অফ-সিজনে দেশি ক্রিকেটারদের কাউন্টিতে খেলার ব্যবস্থা
- উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য কোচদের বিদেশি লিগে যুক্ত করা
তামিম বলেন,
“আমরা চাইলে দুইজন কোচকে নিজেদের খরচে ইংল্যান্ডে কাউন্টি দলের সঙ্গে যুক্ত করতে পারি। তারা উন্নত কোচিং শিখে দেশে ফিরে অন্যদের শেখাতে পারবেন। এভাবেই কোচিং কাঠামো শক্তিশালী হবে।”