কক্সবাজারে বিরল এক ঘটনা ঘটেছে। জেলার উখিয়ার ইয়াছমিন আক্তার (২৫) একসঙ্গে জন্ম দিয়েছেন চারটি শিশু—তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এ বিশেষ মুহূর্তটি মা, পরিবারের সদস্য, চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাঝে তৈরি করেছে এক অসাধারণ আনন্দের আবহ।
🏥 সফল অস্ত্রোপচারে পৃথিবীর আলো দেখে চার নবজাতক
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে কক্সবাজার ইউনিয়ন হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ গাইনি বিভাগে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করে চার নবজাতক।
অস্ত্রোপচার পরিচালনা করেন গাইনী ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. আরিফা মেহের রুমীর নেতৃত্বে ডা. মোসাম্মৎ রোকসানা আক্তার, ডা. নুর মোহাম্মদ এবং ডা. কৌশিক দত্ত।
হাসপাতালে ভর্তির কিছু ঘণ্টার মধ্যেই সফলভাবে জন্ম দেন ইয়াছমিন আক্তার।
👪 পরিবারের আনন্দে বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস
ইয়াছমিন আক্তার উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের মুছারহলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী রবিউল আলমের স্ত্রী। রবিউল গত ৮ বছর ধরে সৌদিতে কর্মরত। সন্তানদের সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
নবজাতকদের দাদা নুর আহমদ বলেন,
“আমি একসঙ্গে চারটি নাতি-নাতনি পেয়ে খুবই আনন্দিত। তিনটি ছেলে, একটি মেয়ে—আমার ছেলে সৌদি থেকেও খুব খুশি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।”
🩺 চিকিৎসকরা জানালেন, এটি ছিল উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা
অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া ডা. রোকসানা আক্তার জানান,
“মায়ের গর্ভাবস্থা ছিল উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ। তবে আমাদের পুরো মেডিকেল টিম প্রস্তুত ছিল। সফল অস্ত্রোপচারে মা ও চার নবজাতক সুস্থ আছেন, যা আমাদের জন্যও বড় সাফল্য।”
নবজাতকদের ওজন যথাক্রমে ৭০০ গ্রাম, ৬০০ গ্রাম ও ৫৮০ গ্রাম। বর্তমানে তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (NICU) পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
🔬 স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা যা বলছেন
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাকৃতিকভাবে চারটি শিশুর একসঙ্গে জন্ম একটি অত্যন্ত দুর্লভ ঘটনা। এমন ঘটনা প্রায় ৭ লাখে একবার ঘটে।
🎁 মায়ের জন্য উপহার ও চিকিৎসা সহায়তা
ইউনিয়ন হাসপাতাল কক্সবাজার পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল মুকিত চৌধুরী জানান,
“এই সফল অস্ত্রোপচার কক্সবাজারের চিকিৎসা ইতিহাসে একটি মাইলফলক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মা ও শিশুদের সুস্থতার জন্য দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসা ও পুষ্টি সহায়তা দেবে।”
