সরকার বিদেশ থেকে স্বর্ণ আমদানি সংক্রান্ত ব্যাগেজ রুলসে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এখন থেকে আকাশ ও জলপথে যাত্রীরা বছরে মাত্র একবার ৫০ হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম (১০ ভরি) ওজনের স্বর্ণের বার আনতে পারবেন। আগে যাত্রী যতবার ইচ্ছা শুল্ক দিয়ে স্বর্ণ আনতে পারতেন, কিন্তু নতুন বিধিমালায় তা সীমিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিনা শুল্কে ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার আনার সুযোগও বছরে একবারেই সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।
স্বর্ণের বাজারে প্রভাব ও ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানাচ্ছে, দেশে স্বর্ণের চাহিদা মেটাতে যথাযথ সরবরাহ না হলে বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার পাশাপাশি চোরাচালানের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। বাজুসের মুখপাত্র আনোয়ার হোসেইন বলেন,
“বাজারে স্বর্ণের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ থাকা জরুরি। মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়িক ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে, যা স্বর্ণ বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ফলে স্বর্ণ কেনা সীমিত হয়ে আসছে এবং বাজার সংকুচিত হচ্ছে।”
স্বর্ণের চাহিদা ও আমদানি
অবসর তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় ২০ থেকে ৪০ মেট্রিক টন স্বর্ণের চাহিদা রয়েছে, যার ১০ শতাংশই পুরানো অলংকার বিনিময়ের মাধ্যমে পূরণ হয়। বাকিটুকু আসে বিমানযাত্রী ও মেরিন পথে আসা স্বর্ণের মাধ্যমে। তবে নতুন শুল্ক বিধিমালায় কড়াকড়ি আরোপের ফলে বৈধ আমদানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর মন্তব্য করেন,
“বৈধ আমদানি ইতিমধ্যেই কমে গেছে। শুল্ক ও বিধিমালায় অতিরিক্ত কড়াকড়ি ব্যবসায়ীদের উপর চাপ বাড়াবে। তাই আমদানির নীতিমালা সহজ করা উচিত, যাতে বাজারে স্বর্ণের পরিমাণ পর্যাপ্ত থাকে।”
চালানের সম্ভাবনা বাড়তে পারে
সরকারের নতুন নির্দেশনায় স্বর্ণ আমদানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের ফলে বৈধ পথের বিকল্প হিসেবে চোরাচালানের মাত্রা বাড়তে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। সুতরাং সীমান্ত ও বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদারের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
কাস্টমস তথ্য ও পরিস্থিতি
ঢাকা কাস্টমসের তথ্য মতে, ২০২৩ সালে শুধু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে ব্যাগেজ রুলসের আওতায় সাড়ে ৩১ টন স্বর্ণ আমদানি হয়েছে। যা ২০২২ সালের তুলনায় কিছুটা কম।