ইরানে হামলা নিয়ে ট্রাম্পের ‘দুই সপ্তাহের সময়’: শান্তির বার্তা না নতুন যুদ্ধের প্রস্তুতি?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সম্ভাব্য সামরিক হামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছেন—হোয়াইট হাউসের এমন ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা। অনেকে বলছেন, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে ট্রাম্পের বক্তব্যে শান্তির বার্তা থাকলেও তা বাস্তবে যুদ্ধের অগ্রভাগেই গড়ায়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প বহুবারই দ্বৈত বার্তা দিয়েছেন। যেমন—রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় শান্তির আহ্বান জানালেও, পরে ইউক্রেনে গোপনে সিআইএ-র ঘাঁটি স্থাপনসহ সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার তথ্য সামনে আসে। একইভাবে গাজা সংকটে কিংবা ইরান-ইসরাইল বিরোধে তিনি বারবার শান্তির কথা বললেও বাস্তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।

পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে দ্বিধা

ইরান-ইসরাইল সাম্প্রতিক উত্তেজনায় ট্রাম্প একদিকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানালেও, অন্যদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বিরুদ্ধে হুমকিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এমনকি ইসরাইলের পাশে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ একটি ‘বাস্তব বিকল্প’ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন:

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন—যুক্তরাষ্ট্র কি ইসরাইলের সঙ্গে মিলে ইরানে হামলায় অংশ নেবে কিনা।

এই ঘোষণার পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বড় একটি অংশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন—ট্রাম্প হয়তো সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা বলছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যা বলেন, তা প্রায়শই পাল্টে ফেলেন। শান্তির নামে শুরুতে সময় চেয়ে পরে সামরিক কর্মকাণ্ডই জোরদার করেন।’

ট্রাম্পের আগের রেকর্ড

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ও তিনি দাবি করেছিলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।’ পরে জানা যায়, তখনই ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ২০টি সিআইএ ঘাঁটি স্থাপন করেছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই অনেকে সন্দেহ করছেন, এবারও ট্রাম্প হয়তো ইরানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপের পরিকল্পনায় রয়েছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এখন দেখার বিষয়—ট্রাম্পের কথিত দুই সপ্তাহের সময় আসলে কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ সৃষ্টি করবে, নাকি এটি হবে আরেকটি সংঘাতের সূচনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *