ইহুদি জাতি পৃথিবীর প্রাচীনতম জাতিগুলোর একটি, যাদের মধ্যে আল্লাহ তাআলা বহু নবী ও বার্তাবাহক প্রেরণ করেছিলেন। তাওরাতসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থও তাদেরকেই প্রথম প্রদান করা হয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের অতীত আচরণ ও ঈমানী অবস্থান নিয়ে কোরআন ও হাদিসে বিস্তর আলোচনা রয়েছে।
🕋 নবী হত্যার ঘটনা ও আল্লাহর নিন্দা
পবিত্র কোরআনের ভাষ্য অনুযায়ী, ইহুদি জাতি কিছু নবীকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে।
সূরা নিসা (৪:১৫৫):
“তারা নবীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে।”
এমনকি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর বিরুদ্ধেও চক্রান্ত করার কথা উল্লেখ রয়েছে:
সূরা নিসা (৪:১৫৭):
“তারা বলে, ‘আমরা মারিয়ামের পুত্র ঈসাকে হত্যা করেছি’— অথচ তারা তাকে হত্যা করেনি…”
💬 লঙ্ঘন ও চুক্তিভঙ্গের কারণে লানতের ঘোষণা
ইহুদি জাতির মধ্যে কিছু অংশ আল্লাহর সঙ্গে করা অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে, যার ফলে তাদের ওপর অভিশাপ দেওয়া হয়েছে।
সূরা মায়েদা (৫:১৩):
“তারা তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করায় আমি তাদের অভিশপ্ত করেছি এবং তাদের অন্তর কঠিন করে দিয়েছি।”
সূরা মায়েদা (৫:৭৮):
“ইসরাঈলের কাফিরদের ওপর দাউদ ও ঈসা (আ.)-এর ভাষায় অভিশাপ এসেছে…”
🐒 রূপান্তরের ঘটনা
আল্লাহর আদেশ অমান্যকারী একদল লোকের আচরণ পরিবর্তনের শাস্তিস্বরূপ তাদের বানর ও শূকররূপে রূপান্তরিত করার ঘটনা কোরআনে এসেছে।
সূরা বাকারা (২:৬৫):
“তাদের বলেছিলাম, তোমরা নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও।”
সূরা মায়েদা (৫:৬০):
“আল্লাহ তাদের কাউকে বানর এবং কাউকে শূকর বানিয়ে দিয়েছেন।”
🔍 চক্রান্ত ও সমাজে বিশৃঙ্খলার ইতিহাস
কোরআনের ব্যাখ্যায় দেখা যায়, কিছু ইহুদি গোষ্ঠী পৃথিবীতে ফিতনা ও ফাসাদ সৃষ্টি করে।
সূরা ইবরাহিম (১৪:৪৬):
“তারা চক্রান্ত করে, আর আল্লাহ তা জানেন এবং তাদের কৌশল ব্যর্থ করেন।”
ইতিহাসের পাতায় দেখা যায়, অনেক ব্যাংকিং, মিডিয়া এবং রাজনীতিক ব্যবস্থায় প্রভাব বিস্তারকারী গোষ্ঠীর মধ্যে কিছু ইহুদি পরিবারের নাম উঠে আসে। তবে তা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা ব্যাক্তির সাথে সম্পৃক্ত, সমগ্র ইহুদি জাতির নয়।
🕊️ ইসলামি দৃষ্টিকোণ ও ভবিষ্যৎ ভবিষ্যদ্বাণী
একটি সহিহ হাদিসে কেয়ামতের সময় ইহুদিদের সঙ্গে মুসলমানদের এক সংঘর্ষের কথা বলা হয়েছে:
সহিহ মুসলিম (২৯২২):
“কেয়ামত হবে না, যতক্ষণ না মুসলমানরা ইহুদিদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে…”
আরেক হাদিসে উল্লেখ আছে যে, দাজ্জালের অনুসারীদের মধ্যে ইহুদি জনগোষ্ঠীর এক দল থাকবে।
সহিহ মুসলিম (২৯৪৪):
“ইস্পাহানের সত্তর হাজার ইহুদি দাজ্জালের অনুসারী হবে।”
🌍 আধুনিক বিশ্ব ও বাস্তবতা
বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অর্থনীতি, গণমাধ্যম ও প্রযুক্তিতে বহু ইহুদি পেশাদার ও কর্পোরেট পরিবার কাজ করছে। তবে ধর্মীয় পরিচয়ের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে গ্লোবাল রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষমতার সম্পর্ক। ইসলাম ধর্ম মতে, অন্য জাতিগুলোর মতোই ইহুদি জাতির মধ্যেও সৎ ও সত্যনিষ্ঠ মানুষ রয়েছে।