নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ছাত্রদল কর্মী ঈসমাইল হোসেন (২৬) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শনিবার (২১ জুন) দুপুর ২টার দিকে ঢাকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত ঈসমাইল পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার খানেপুর মহল্লার বাসিন্দা আব্দুর রহিম ভূঁইয়ার ছেলে এবং তিনি পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
পরিবারের দাবি: বিচার চান নিহতের বাবা
ঈসমাইলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে তার বাবা আব্দুর রহিম ভূঁইয়া জানান, “আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আজই (শনিবার) ময়নাতদন্ত শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। আমি সরকারের কাছে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
ছাত্রদলের বক্তব্য: রাজনৈতিক হামলার শিকার
পলাশ থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান পাপন বলেন, “ঈসমাইল একজন নির্ভীক ও নিবেদিত ছাত্রদল কর্মী ছিলেন। গত ১৫ জুন পলাশে ছাত্রদলের একটি শান্তিপূর্ণ মিছিলে জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের অনুসারীরা পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে গুলি চালায়। এতে ঈসমাইলসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। ঈসমাইল আজ মারা গেছেন—এটি আমাদের জন্য গভীর শোকের বিষয়। আমরা অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
পুলিশের অবস্থান: তদন্তের অপেক্ষা
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, “ঈসমাইল হোসেনের মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক রিপোর্ট পাইনি। প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া মাত্র আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সংঘর্ষের পটভূমি: দ্বন্দ্বের বলি রাজনীতিক কর্মী
১৫ জুন (রোববার) সন্ধ্যায় পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার বিএডিসি মোড়ে বিএনপির দুটি গ্রুপ—পলাশ উপজেলা ছাত্রদল ও জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন।
ঈসমাইলকে প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হলেও অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঘটনার রাতেই ছাত্রদল নেতা সিয়াম মিয়া বাদী হয়ে জুয়েলসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পাল্টা মামলাও দায়ের করে জুয়েলের পক্ষ।
গ্রেফতার: প্রধান আসামি পুলিশের হেফাজতে
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ফজলুল কবির জুয়েলকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।