ইরান-ফ্রান্স পারমাণবিক আলোচনা ত্বরান্বিত করতে সম্মত হয়েছেন ম্যাক্রোঁ ও পেজেশকিয়ান

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে ফ্রান্স ও ইরান আলোচনার গতি বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। শনিবার (২১ জুন) ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তিনি টেলিফোনে ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন। এতে তারা পারমাণবিক আলোচনার অগ্রগতিতে একমত হন।

শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির নিশ্চয়তা দাবি ম্যাক্রোঁর

ফোনালাপের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে ম্যাক্রোঁ বলেন, “আমি জোর দিয়ে বলেছি—ইরান কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করবে না। তাদের অবশ্যই এমন প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে।” তিনি আরও বলেন, “এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার পথ এখনো আছে এবং বৃহৎ সংকট এড়ানো সম্ভব।”

ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানও তার পূর্বসূরিদের মতোই পুনরায় আশ্বস্ত করেন যে, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না।

দীর্ঘমেয়াদি বিরোধ ও সম্ভাব্য সমাধান

পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। ইরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইসরায়েলের আশঙ্কা—তেহরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক ইরান পরমাণু চুক্তি (জেসিপিওএ) ছিল উত্তেজনা নিরসনের বড় পদক্ষেপ। তাতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন অংশ নেয়। চুক্তি অনুযায়ী, ইরান তাদের পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

তবে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ফের অচলাবস্থা তৈরি হয়। সম্প্রতি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনার নতুন পর্ব শুরু হলেও, এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের সামরিক তৎপরতা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *