ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর ভিন্নমত, ভোটের পরিবেশ নিয়ে সংশয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে এখনো ভিন্নমুখী অবস্থান রয়েছে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে। নির্বাচন কমিশন গঠনকে স্বাগত জানালেও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও ইসলামী ছাত্রশিবির দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। তবে ভোটের উপযোগী পরিবেশ নেই বলে অভিযোগ তুলেছে ছাত্রদল।

সর্বশেষ, গত ১৬ জুন (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা-সহ ১০ সদস্যের একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি অনুমোদন করা হয়। এরপর থেকেই ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছে।

বয়সসীমা না রাখার সিদ্ধান্তে সমালোচনা

ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খান বলেন, “ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীর জন্য নির্ধারিত বয়সসীমা থাকা উচিত। এতে প্রকৃত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান নেওয়া কিছু ব্যক্তি যেন এই সুযোগ না নিতে পারে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।”

একই ধরনের মত প্রকাশ করেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্য সচিব জাহিদ আহসান। তার মতে, “বয়সসীমা না রাখলে যারা দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছেন, তারা এই সুবিধা নিয়ে ডাকসুকে তাদের ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে পারেন।”

ছাত্রদলের আশঙ্কা: নির্বাচনী বৈষম্য

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, “ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ এখনো অনুপযুক্ত। প্রশাসন যদি ২০১৯ সালের মতো কোনো পক্ষকে সুবিধা দিতে নির্বাচন তড়িঘড়ি করে, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কিছু সংগঠনকে বাড়তি সুবিধা দিতেই প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিচ্ছে।”

প্রশাসনের আশ্বাস: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি করেছে, কোনো পক্ষকে সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই। নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

প্রক্টর ড. সাহফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যেসব অভিযোগ বা দুর্বলতার কথা উঠে আসে, সেগুলো আমরাও পর্যবেক্ষণ করি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করি। ক্যাম্পাসজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ নিরাপত্তা জোরদারে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”

উপসংহার

ডাকসু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠিত হলেও ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে স্পষ্ট মতবিরোধ বিরাজ করছে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কীভাবে সব পক্ষের আস্থা অর্জন করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *