ভোলার লালমোহন পৌরসভায় দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনার কারণে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন এলাকাবাসী। সড়ক সংস্কারের অভাব ও পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলো রূপ নেয় জলাশয়ে। বিশেষ করে লঞ্চঘাট সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত, যা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশা
লালমোহন পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ লঞ্চঘাট সড়ক দিয়ে তিনটি ওয়ার্ডের হাজারো মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কজুড়ে তিন থেকে চার ফুট পানিতে ডুবে থাকে গর্ত। পানি জমে থাকায় বোঝার উপায় নেই এটি রাস্তা, নাকি পুকুর।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ট্রাকচালক আবদুল মান্নান বলেন, “বড় গাড়ি চললেও রিকশা বা সাইকেলে চলাচল অসম্ভব। প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে।” অপর এক বাসিন্দা ও শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, “এই রাস্তা ২০ বছরেও সংস্কার হয়নি। এতে শিক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়ছে এলাকার মানুষ।”
বাজার এলাকারও বেহাল দশা
কাঁচাবাজার ও মাছ বাজার এলাকায়ও একই চিত্র। রাস্তায় কাদাপানি জমে থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা। বিক্রেতা আবদুল মতিন জানান, “রাস্তা খারাপ থাকায় ক্রেতা কমে গেছে।” এক ক্রেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, “মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়া যায় না, আবার দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েও রিকশা মেলে না।”
সড়ক ও ড্রেনেজ পরিস্থিতি ভয়াবহ
পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, ৪৮ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে প্রায় ২০ কিলোমিটার এখন চলাচলের অযোগ্য। বৃষ্টির পানির সঠিক নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অনেক বসতবাড়িতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।
আশার কথা বলছেন প্রশাসক
পৌর প্রশাসক মো. শাহ আজীজ জানান, “বাসিন্দাদের দুর্ভোগ লাঘবে খুব শিগগিরই সড়ক সংস্কার ও ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে একটি সড়কের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং চলমান তিনটি প্রকল্পের আওতায় উন্নয়ন কার্যক্রম চলবে।”
৩৯৬ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত লালমোহন পৌরসভায় ১২টি ওয়ার্ডে প্রায় ৩ লাখ মানুষের বসবাস। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব এলাকাবাসীর জীবনে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান কামনা করছেন স্থানীয়রা।