সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে গ্রেফতার ও ‘মব’ পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির অবস্থান: তদন্তের আশ্বাস দিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ‘মব’-ঘটনাকে অবমাননাকর ও অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘মব জাস্টিস’-এর সংস্কৃতি কখনোই দল সমর্থন করে না, এবং কেউ দলের পক্ষ থেকে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নুরুল হুদার গ্রেফতার ও উত্তরা অঞ্চলে উত্তেজনা

রবিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে কে এম নুরুল হুদাকে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ সময় জনতার ‘মব অ্যাকশন’-এর শিকার হন তিনি, যা সামাজিক মাধ্যমে ও বিভিন্ন মহলে সমালোচনার জন্ম দেয়।

উত্তরা-পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, সাবেক সিইসিকে একটি মামলার ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে জনতা তার বাসা ঘেরাও করে পুলিশের হস্তক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করছিল।

বিএনপির বক্তব্য ও দলীয় অবস্থান

সোমবার (২৩ জুন) ফোনে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন,

সাবেক নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে যা ঘটেছে তা লাঞ্ছনাকর ও অগ্রহণযোগ্য। বিএনপি কখনো এমন আচরণ সমর্থন করে না।”

তিনি আরও জানান, যদি প্রমাণিত হয় বিএনপির কোনো কর্মী বা নেতা এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, তাহলে তদন্তের মাধ্যমে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মামলার পটভূমি

একই দিন রাতে ঢাকার ডিবি কার্যালয়ে জানানো হয়, শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা একটি মামলায় সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন খান।

মামলায় ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা সিইসি—কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নুরুল হুদা এবং কাজী হাবিবুল আউয়াল-সহ সাবেক পাঁচজন আইজিপিকেও আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন হাসান মাহমুদ খন্দকার, শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ ও বর্তমান আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

কী বলছেন পুলিশ?

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের ডিসি মইদুল ইসলাম জানান, উত্তপ্ত পরিস্থিতি এড়াতে দ্রুত পুলিশ পাঠিয়ে সাবেক সিইসিকে হেফাজতে নেওয়া হয়। পরিস্থিতি যাতে আরও উত্তেজনাকর না হয়, সে লক্ষ্যে নেয়া হয় নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ।

প্রেক্ষাপট

কে এম নুরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ও বিতর্ক ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *