পুতিনকে যুদ্ধাপরাধে বিচার চেয়ে ফের তোপ জেলেনস্কির, ন্যাটো সম্মেলনে ইউরোপের সমর্থন চাইলেন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ফের কড়া ভাষায় সমালোচনা করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের দায়ে পুতিনসহ রুশ কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বিচার করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (২৫ জুন) নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এই দাবি জানান। সম্মেলনের এক ফাঁকে ইউরোপের কাউন্সিলের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন জেলেনস্কি, যার মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পথ উন্মুক্ত হবে।

জেলেনস্কি বলেন, “আমাদের দেখাতে হবে যে যারা আগ্রাসন চালায়, তাদের শাস্তি পেতেই হবে। এটি নিশ্চিত করতে পুরো ইউরোপকে একযোগে কাজ করতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “পুতিনসহ প্রতিটি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের জন্য রাজনৈতিক ও আইনি সাহস প্রয়োজন।”

উল্লেখ্য, রুশ বাহিনীর হাতে ইউক্রেনে শিশু ও সাধারণ নাগরিক নিহত হওয়ায় আগেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

পাল্টাপাল্টি হামলা: ইউক্রেন-রাশিয়া উত্তেজনায় নতুন মাত্রা

ইতোমধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রয়েছে। দোনেৎস্ক ও দিনিপ্রোতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৩০০ জনের বেশি। অন্যদিকে, রাশিয়ার ভোরোনেজ অঞ্চলে ইউক্রেন ড্রোন হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার দাবি, তারা ৪০টির বেশি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে।

দিনিপ্রোতে রুশ হামলায় শিশু হাসপাতাল, দোকান ও সরকারি ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মস্কো দাবি করেছে, দোনেৎস্ক অঞ্চলের দেলিভকা গ্রাম এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।

ইউক্রেনের পাশে পশ্চিমা শক্তিগুলো

উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জন্য নতুন সামরিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডস। ব্রিটেন জানিয়েছে, রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদের সুদ থেকে পাওয়া অর্থ ব্যবহার করে তারা ইউক্রেনকে ৭০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টি উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র দেবে। এছাড়া, নেদারল্যান্ডস ২০৩ মিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক ড্রোন শনাক্তকরণ রাডার।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘দীর্ঘ ও গুরুত্বপূর্ণ’ বৈঠক

সম্মেলনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দীর্ঘ সময় বৈঠক করেন জেলেনস্কি। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “বৈঠকে যুদ্ধবিরতি এবং ইউক্রেনীয় জনগণের সুরক্ষা নিয়ে গভীর আলোচনা হয়েছে।” এদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও পুতিনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এই মুহূর্তে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ একটি নতুন মোড়ে প্রবেশ করেছে, যেখানে সামরিক সংঘাতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং বিচার ব্যবস্থাও বড় ভূমিকা পালন করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *