ইসলামে বিশ্বাস করা হয়, জিনও মানুষের মতো আল্লাহর সৃষ্টি। তাদেরকেও ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, এবং তারা যেমন নেক কাজের জন্য জান্নাতে যেতে পারে, তেমনি খারাপ কাজ করলে জাহান্নামেও যেতে পারে। মানুষের মতো জিনদের মধ্যেও ভালো ও মন্দ উভয় ধরণের চরিত্র রয়েছে। তবে অনেক সময় জিনদের মাধ্যমে মানুষের ক্ষতির আশঙ্কাও থেকে যায়। তাই ইসলামে এ বিষয়ে দোয়া ও সতর্কতা অবলম্বনের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
🧿 জিনের অনিষ্ট: কি হতে পারে?
- দৈহিক ক্ষতি: জিন মানুষকে আঘাত করতে বা অসুস্থ করে দিতে পারে।
- অদৃশ্য চুরি: হাদিসে বর্ণিত আছে, জিনদের দ্বারা খাদ্য বা সম্পদ চুরির ঘটনাও ঘটতে পারে।
- বদনজর ও যাদু: জিনদের মাধ্যমে বদনজর বা যাদু করাও সম্ভব বলে উল্লেখ রয়েছে।
🛡️ কোরআন ও হাদিসে জিন থেকে রক্ষার দিকনির্দেশনা
❖ আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া:
দোয়া:
“আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রজিম, মিন হামযিহি ওয়া নাফখিহি ওয়া নাফসিহি”
অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে শয়তানের প্ররোচনা, ফুৎকার ও কবিতার কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় চাই।
❖ বাড়িতে প্রবেশ ও খাবারের সময় দোয়া:
রাসুল (সা.) বলেছেন:
“যখন কেউ বাড়িতে প্রবেশ করে ও খাবারের সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে, তখন শয়তান বলে, ‘আজ রাতে আমাদের থাকার জায়গা নেই, খাওয়ারও সুযোগ নেই।’” (মুসলিম)
❖ রাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা:
হাদিস অনুযায়ী, রাতে শয়তান বা ক্ষতিকর প্রাণী থেকে বাঁচতে নিচের কাজগুলো করতে বলা হয়েছে:
- পাত্র ঢেকে রাখা
- পানির পাত্রের মুখ বন্ধ করা
- দরজা বন্ধ রাখা
- আলো নিভিয়ে রাখা
যদি কিছু না থাকে, কাঠি বা অন্য কিছু দিয়ে পাত্র ঢেকে রেখে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা সুন্নাহ।
❖ বিশেষ সুরক্ষা দোয়া ও আমল:
- সকাল ও সন্ধ্যার জিকির: নিয়মিত জিকির ও দোয়া পাঠ করুন।
- সুরা বাকারা তেলাওয়াত: রাসুল (সা.) বলেন, “যে ঘরে সুরা বাকারা তিলাওয়াত করা হয়, শয়তান সে ঘর থেকে পালিয়ে যায়।” (মুসলিম)
- আয়াতুল কুরসি পাঠ: সন্ধ্যার সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করলে শয়তান রক্ষা করতে পারে না।
❖ হাদিসের উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত:
বুখারি শরিফে হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর একটি বিখ্যাত হাদিসে বলা হয়েছে, তিনি যাকাতের খাদ্য পাহারা দিচ্ছিলেন, তখন শয়তান এসে তা চুরি করেছিল। এই হাদিস প্রমাণ করে যে জিনরা মানুষের বস্তুগত ক্ষতিও করতে পারে।