ইসরাইলের পরিকল্পনায় ছিলেন আয়াতুল্লাহ খামেনি, সুযোগ না পাওয়ায় হামলা হয়নি

সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে টানা ১২ দিনের সংঘাত চলাকালে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ইসরাইল। তবে বাস্তবে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় ইসরাইলের টেলিভিশন চ্যানেল ১৩-এ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমরা খামেনিকে নির্মূল করতে চেয়েছিলাম। যদি তাকে দেখতে পেতাম, তাহলে নিশ্চয়ই শেষ করে দিতাম। কিন্তু সুযোগ পাইনি।”

যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়াই হামলার প্রস্তুতি

সাক্ষাৎকারে আরও প্রশ্ন করা হয়, এমন একটি বড় আকারের হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি প্রয়োজন ছিল কিনা। জবাবে কাৎজ স্পষ্ট জানান, “এসব ক্ষেত্রে আমাদের আলাদাভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি নিতে হয় না।”

একই মন্তব্য তিনি ইসরাইলের আরও দুটি সংবাদমাধ্যম—কান এবং চ্যানেল ১২-এর সঙ্গে আলাপকালে পুনর্ব্যক্ত করেন। সেখানে তিনি বলেন, ইরানের আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার কৌশল এবং প্রয়োজনে বিমান হামলার মাধ্যমে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় চালুর সম্ভাবনা নস্যাৎ করাই ছিল ইসরাইলের উদ্দেশ্য।

বাংকারে লুকিয়ে ছিলেন খামেনি

ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, “খামেনিকে টার্গেট করার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু তিনি এত গভীরে বাংকারে লুকিয়ে ছিলেন যে, তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি তিনি তার জেনারেলদের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলেন।” তবে এই দাবি সম্পর্কে কোনো নিরপেক্ষ প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

যুদ্ধের সময়ে খামেনির বক্তব্য

যুদ্ধকালীন সময়েই খামেনি একাধিক ভিডিও বার্তা দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন এবং সেনাবাহিনীর মনোবল ধরে রাখার আহ্বান জানান, যা কাৎজের বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ঝুঁকি

বিশ্লেষকদের মতে, যদি আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যা করা হতো, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিতে পারত। কারণ, তিনি কেবল ইরানের কার্যত রাষ্ট্রপ্রধান নন, বরং বিশ্বের কোটি কোটি শিয়া মুসলমানদের কাছে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে বিবেচিত।

ট্রাম্পের মন্তব্য

উল্লেখ্য, সংঘাত চলাকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও খামেনিকে হত্যার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ১৭ জুন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “আমরা জানি ‘সর্বোচ্চ নেতা’ কোথায় লুকিয়ে আছেন। তিনি একটি সহজ লক্ষ্য। তবে এখনই তাকে হত্যা করছি না।”

তবে কিছুদিন পর ট্রাম্প মত পরিবর্তন করে বলেন, ইরানে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *