দুইদিন নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে সোমবার (১৬ জুন) ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের সোনিপতের একটি খাল থেকে উদ্ধার করা হয় মডেল সিম্মি চৌধুরীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ। এক গানের ভিডিও শুটিংয়ে অংশ নিতে গিয়ে ২৩ বছর বয়সী এই মডেল নির্মমভাবে খুন হন। ঘটনার পরদিনই পুলিশ তার কথিত প্রেমিক সুনীলকে গ্রেফতার করে এবং তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন।
প্রেমের সম্পর্ক থেকে শুরু হয় নির্মমতা
সিম্মি চৌধুরী, যিনি শীতল নামেও পরিচিত, কয়েক বছর ধরে মডেলিং এবং গানের ভিডিওতে অভিনয় করছিলেন। পুলিশ জানায়, সিম্মি ও সুনীলের মধ্যে ছয় বছরের সম্পর্ক ছিল। প্রেমের টানাপড়েন থেকে সৃষ্ট উত্তেজনার জেরেই ঘটে এই হত্যাকাণ্ড।
ঘটনার দিন (শনিবার), সিম্মি পানিপাতের আহার গ্রামে একটি মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ে অংশ নিতে যান। সেখানেই সুনীল তাকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে যান এবং কিছুক্ষণ পর তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়, যা এক পর্যায়ে শারীরিক নির্যাতনে রূপ নেয়।
রাতের শেষ ভিডিও কল, তারপর নিস্তব্ধতা
রাত দেড়টার দিকে সিম্মি তার বোন নেহাকে ভিডিও কলে জানান, সুনীল তাকে মারধর করছে। এরপর থেকে আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সুনীল একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে তাকে খুন করে এবং মরদেহ গাড়িসহ ফেলে দেন খালে।
উদ্ধার অভিযানে রহস্যভেদ
রবিবার সোনিপতের একটি খাল থেকে পুলিশ সুনীলের গাড়ি উদ্ধার করে, তবে গাড়িতে মডেলের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সুনীল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে দাবি করেন, গাড়িটি খালে পড়ে গেলে তিনি সাঁতরে বের হন, কিন্তু সিম্মি ডুবে যান।
সোমবার খারখোদার রিলায়েন্স খাল থেকে গলা কাটা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হাত ও বুকে উল্কিচিহ্ন দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় এটি মডেল সিম্মি চৌধুরীর দেহ। মরদেহে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল।
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানই ছিল মূল কারণ?
পুলিশ জানায়, সুনীল বিয়ের প্রস্তাব দিলেও সিম্মি তা প্রত্যাখ্যান করেন, কারণ তিনি জানতে পারেন সুনীল বিবাহিত এবং দুই সন্তানের বাবা। তবে পুলিশ আরও জানায়, সিম্মিও ছিলেন বিবাহিত এবং তার একটি পাঁচ মাস বয়সী সন্তান রয়েছে।
এদিকে, নিহতের বোন নেহা ঘটনার আগেই মাতলাউড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন।
তদন্ত চলছে
পুলিশ ইতোমধ্যে সুনীলকে আটক করেছে এবং হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তিনি। তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ খতিয়ে দেখছে, সিম্মি কাদের সঙ্গে শুটিংয়ে গিয়েছিলেন এবং ঘটনার সময় আর কেউ উপস্থিত ছিল কি না।