ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয়বারের মতো নিজের ছেলের বিয়ে স্থগিত করলেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) যুদ্ধাক্রান্ত বিরশেবা সোরোকা হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আবেগপ্রবণভাবে এ ঘোষণা দেন তিনি।
ব্যক্তিগত ক্ষতির কথা জানিয়ে কটাক্ষের মুখে
নেতানিয়াহু জানান, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে তার ছেলে আবনার নেতানিয়াহুর বিয়ের দিনক্ষণ পুনরায় পেছাতে হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাকে ও আমার পরিবারকে এই যুদ্ধে ব্যক্তিগত মূল্য দিতে হচ্ছে। আমরা সবার মতো ত্যাগ স্বীকার করছি।”
তিনি আরও বলেন, ছেলের বিয়ের তারিখ পেছানোয় ছেলে, হবু পুত্রবধূ ও স্ত্রী সারা নেতানিয়াহু গভীর কষ্ট পেয়েছেন। তবে দেশের সংকটময় মুহূর্তে এই ক্ষতি মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দ্বিতীয়বার স্থগিত বিয়ের পেছনের প্রেক্ষাপট
আবনারের বিয়ের প্রথম তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল ২০২৩ সালের নভেম্বরে। তবে তখন হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত বাসভবনে আঘাত হানলে বিয়েটি স্থগিত করতে হয়। এবার দ্বিতীয়বারের মতো তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২৫ সালের ১৬ জুন। কিন্তু ইরান-ইসরাইল পাল্টাপাল্টি হামলার কারণে সেটিও স্থগিত হয়ে যায়।
নেতানিয়াহুর মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ
সোরোকা হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে নেতানিয়াহু বলেন, “এই যুদ্ধে আমরা প্রত্যেকেই মূল্য দিচ্ছি, আমার পরিবারও তার ব্যতিক্রম নয়।” তিনি স্ত্রী সারাকে “হিরো” আখ্যা দিয়ে বলেন, সারাহ এই পরিস্থিতিতে পরিবারকে সামলাচ্ছেন।
তবে তার এমন ব্যক্তিগত আবেগঘন মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ইসরাইলের জনগণ। অনেকেই নেতানিয়াহুর ‘যুদ্ধের ব্যক্তিগত মূল্য’ তত্ত্ব ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করাকে অপসাংবাদিকতা ও অতিরঞ্জন হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিশেষ করে স্ত্রী সারাকে “নায়িকা” বলা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতানিয়াহুকে ‘আত্মমুগ্ধ’ ও বাস্তবতা বিচ্যুত এক নেতা বলেও সমালোচনা করা হয়।