মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাত বিশ্ববাজারে মূল্যবান ধাতুগুলোর দামে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। সাধারণত বৈশ্বিক অস্থিরতায় স্বর্ণের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়লেও এবার দেখা যাচ্ছে উল্টো প্রবণতা। স্বর্ণ ও রুপার দাম কমছে, আর প্লাটিনামের দাম পৌঁছেছে দশ বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে।
স্বর্ণের বাজারে পতন
আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ সংস্থা Investing.com-এর তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহে স্বর্ণের দাম কমেছে প্রায় ২.৩৮ শতাংশ। বর্তমানে প্রতি ট্রয় আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ৩,৩৬৬.৩৭ ডলার দরে। যুদ্ধ শুরুর পর স্বর্ণের দাম সাময়িকভাবে বেড়েছিল, তবে পরে বিনিয়োগকারীরা ব্যবসায়িক ক্ষতি সামলাতে স্বর্ণ বিক্রি শুরু করলে দাম কমতে থাকে।
উল্লেখ্য, এক বছরের ব্যবধানে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৩,৫০৬ ডলার।
রুপার দামেও পতন
স্বর্ণের মতো রুপার বাজারেও দেখা যাচ্ছে দরপতন। গত এক সপ্তাহে রুপার দাম কমেছে ১.৬৮ শতাংশ, এবং বর্তমানে প্রতি ট্রয় আউন্স রুপা বিক্রি হচ্ছে ৩৫.৮০ ডলার দামে। গত এক বছরে রুপার সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ৩৭.৪১ ডলার, আর সর্বনিম্ন ২৬.৭৩ ডলার।
প্লাটিনামের দামে উল্টো চিত্র
এদিকে যুদ্ধজনিত সরবরাহ সংকট প্লাটিনামের দামে ভিন্ন চিত্র তৈরি করেছে। এক সপ্তাহে এই ধাতুর দাম বেড়েছে ৫.৯১ শতাংশ। বর্তমানে প্রতি ট্রয় আউন্স প্লাটিনাম বিক্রি হচ্ছে ১,২৮২ ডলারে, যা গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, শিল্প খাতে প্লাটিনামের চাহিদা থাকলেও সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হওয়ায় এর মূল্য দ্রুত বেড়ে চলেছে।
কপারেও চাপ
শিল্পখাতে বহুল ব্যবহৃত আরেক ধাতু কপার-এর দামও হ্রাস পেয়েছে। এক সপ্তাহে দাম কমেছে প্রায় ১ শতাংশ, বর্তমানে প্রতি ট্রয় আউন্স কপার বিক্রি হচ্ছে ৪.৭৭ ডলারে।
বিশ্লেষণ ও সম্ভাবনা
বিশ্ববাজারের বর্তমান চিত্র বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে মূল্যবান ধাতুগুলোর দামে আরও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে সরবরাহ-চেইনের বাধা, বিনিয়োগকারীদের মনোভাব, এবং আন্তর্জাতিক নীতিগত সিদ্ধান্ত—সবকিছুই পরবর্তী সময়ে দাম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।