ইসলামের দৃষ্টিতে আত্মপ্রদর্শন, লোক দেখানো ইবাদত ও কৃত্রিম আচরণ—সবই রিয়ার আওতায় পড়ে। রিয়া অর্থ লোক দেখানোর জন্য আমল করা। এ ধরনের আচরণ ইসলাম সম্পূর্ণরূপে নিরুৎসাহিত করে, বরং একে ছোট শিরক হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
রিয়া বা লৌকিকতা: একটি আত্মঘাতী প্রবণতা
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “আমি তোমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি ভয় করি ছোট শিরককে।” সাহাবিরা জানতে চাইলেন, ছোট শিরক কী? তিনি বললেন, “রিয়া”। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৩৬৮১)
কিয়ামতের দিন রিয়াকারীদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাআলা বলবেন, “তোমরা দুনিয়ায় যাদের দেখানোর জন্য আমল করেছিলে, তাদের কাছেই যাও। দেখ, তাদের থেকে কোনো প্রতিদান পাও কি না।”
কেন রিয়া মারাত্মক ক্ষতিকর?
রিয়া একজন মানুষের আমল ধ্বংস করে দেয়। এটি তাকে নীতি, আদর্শ ও সত্যিকারের ঈমান থেকে বিচ্যুত করে। মানুষ যখন আল্লাহর সন্তুষ্টি নয়, বরং মানুষের বাহবা কুড়াতে ভালো কাজ করে, তখন সেই কাজের কোনো মূল্য থাকে না আল্লাহর কাছে।
একনিষ্ঠতা ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসাই প্রকৃত ঈমান
বিশুদ্ধ ঈমানের অন্যতম নিদর্শন হলো, মানুষ শুধু আল্লাহর জন্য ভালোবাসা ও ঘৃণা করে, দান করে কিংবা দান থেকে বিরত থাকে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসে, আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করে, আল্লাহর জন্য কাউকে দান করে এবং কাউকে দান না করে—সে-ই প্রকৃত ঈমানদার।” (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৬৮১)
আল্লাহর ইবাদতে ইখলাসের গুরুত্ব
ইবাদতের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে একমাত্র ইখলাস বা একনিষ্ঠতার ওপর। কোরআনে আল্লাহ বলেন:
“তাদের কেবল এ জন্যই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, তারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, সালাত কায়েম করবে এবং জাকাত প্রদান করবে। এটাই সঠিক দীন।”
— [সুরা আল-বাইয়্যিনাহ: ৫]