অনেকেই হাত ও পায়ের অতিরিক্ত ঘাম নিয়ে বিরক্তিতে ভোগেন। এই সমস্যা স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায় এবং অনেক সময় সামাজিক অস্বস্তিও সৃষ্টি করে। যদিও হাত-পা ঘামার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও চিকিৎসা বিজ্ঞানে পুরোপুরি নির্ধারিত নয়, তবে চিকিৎসকরা বেশ কিছু সম্ভাব্য কারণ ও কার্যকর প্রতিকার তুলে ধরেছেন।
কেন ঘামে হাত-পা?
চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত ঘাম সাধারণত স্নায়বিক উত্তেজনা বা শরীরের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়ে থাকে। এছাড়াও কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক ও মানসিক কারণও রয়েছে:
- বংশগত প্রভাব: পরিবারের কারও মধ্যে এই সমস্যা থাকলে উত্তরাধিকারসূত্রে হতে পারে।
- মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা: স্নায়বিক উত্তেজনা বা উদ্বেগের সময় ঘাম বাড়ে।
- শারীরিক সমস্যা: যেমন পারকিনসন্স ডিজিজ, থাইরয়েডের সমস্যা, ডায়াবেটিস, জ্বর, শরীরে গ্লুকোজের স্বল্পতা এবং মেনোপজ-পরবর্তী পর্যায়।
- ভিটামিনের ঘাটতি: বিশেষ করে বি-গ্রুপ ভিটামিনের অভাবে হাত-পা ঘামতে পারে।
চিকিৎসা ও প্রতিকার
হাত-পা ঘামা বন্ধে একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে, যেগুলো প্রয়োগের আগে অবশ্যই সঠিক কারণ নির্ধারণ করা জরুরি।
১. ওষুধ ও লোশন
অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত বিশেষ লোশন হাত ও পায়ে নিয়মিত ব্যবহারে ঘাম কমে যেতে পারে। এটি সরাসরি ঘামগ্রন্থিতে প্রভাব ফেলে।
২. বৈদ্যুতিক থেরাপি (আইওনটোফোরেসিস)
বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে সামান্য বিদ্যুৎপ্রবাহ ব্যবহার করে হাত-পা সেঁকানো হয়, যা ঘাম কমাতে সহায়ক। প্রয়োজনে এটি পুনরায় করা যেতে পারে।
৩. সার্জারি
চিকিৎসাবিজ্ঞানে “সিমপ্যাথেটিক নাভ সার্জারি” নামে একটি পদ্ধতি রয়েছে, যা ঘামের নার্ভ ব্লক করতে সাহায্য করে। তবে এটি শেষ পর্যায়ের বিকল্প হিসেবে বিবেচিত।
সতর্কতা
এই সমস্যার সমাধানে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো চিকিৎসা শুরু না করাই ভালো। কারণ মূল কারণ চিহ্নিত না করে চিকিৎসা করলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।