কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অপহরণের দুই দিন পর সাত বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়া এক কিশোরের খোঁজ এখনও মেলেনি, যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে পরিবারে।
রবিবার (২২ জুন) ভোরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা ২৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে খালের পানিতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায় শিশু মোহাম্মদ আবদুল্লাহর মরদেহ। সে ওই ক্যাম্পের সি-ব্লকের বাসিন্দা হামিদ হোসেনের ছেলে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিমেল রায়।
পুলিশ জানায়, গত ২০ জুন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আবদুল্লাহ নিখোঁজ হয়। কিছুক্ষণ পর অজ্ঞাত এক নম্বর থেকে শিশুর বাবার মোবাইলে ফোন করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় এবং অর্থ না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। মুক্তিপণ না পাওয়ায় অপহরণকারীরা শিশুটিকে হত্যা করে লাশ খালের পানিতে ফেলে দেয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে।
এখনও নিখোঁজ কিশোর রিয়াজুল
অপরদিকে, ১৭ জুন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন রিয়াজুল হাসান (১৮)। তিনি চরম্বা ইউনিয়নের পদ্মশিখিল এলাকার বাসিন্দা ফেরদৌস আলমের ছেলে। রিয়াজুল আগে কক্সবাজারের একটি দোকানে কাজ করতেন এবং কোরবানির ঈদের আগে বাড়ি এসেছিলেন। পরে পুনরায় কর্মস্থলে ফেরার পথে অপহরণের শিকার হন।
রিয়াজুলের বাবা ফেরদৌস আলম জানান, অপহরণের পর একটি অজানা নম্বর থেকে ফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অপহরণকারীরা একপর্যায়ে ফোনে ছেলেকে নির্যাতনের শব্দ শোনান এবং হুমকি দেন— টাকা না দিলে মরদেহ নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি অভিযোগ করেন, অপহরণকারীরা এখন দাবি করছে এক লাখ টাকা দিলেই ছেলে মুক্তি পাবে, কিন্তু তার পক্ষে এ অর্থ জোগাড় করা সম্ভব নয়।
পুলিশের অবস্থান
টেকনাফ মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা হিমেল রায় জানান, কিশোর রিয়াজুলকে উদ্ধারে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তার মোবাইল নম্বর সর্বশেষ ট্র্যাক করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ এলাকায়। অভিযানে ধারাবাহিকতা রাখা হচ্ছে।
লোহাগাড়া থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, ছেলেটি কক্সবাজার এলাকায় চাকরি করত। জিডি দায়েরের পর তাৎক্ষণিকভাবে টেকনাফ থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছে। তাকে উদ্ধারে দুই থানার সমন্বয়ে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।