ইসলামে দোয়া শুধুমাত্র কোনো প্রার্থনা নয়, এটি একটি স্বতন্ত্র ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী, দোয়া ইবাদতের মর্মবাণী বা মূল ভিত্তি। এটি এমন এক উপাসনা, যা আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করে। জীবনের প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি প্রয়োজন কিংবা সংকটে দোয়া আমাদের ভরসা ও আশ্রয়স্থল।
হারানো জিনিস ফিরে পাওয়ার দোয়া
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের এমনকি ক্ষুদ্রতম বিষয়ের জন্যও দোয়া শিখিয়েছেন। হারিয়ে যাওয়া কোনো জিনিস ফিরে পাওয়ার জন্য একটি প্রসিদ্ধ দোয়া হলো:
আরবি:
يَا هَادِيَ الضَّالِّ، وَرَادَّ الضَّالَّةِ ارْدُدْ عَلَيَّ ضَالَّتِي بِعِزَّتِكَ وَسُلْطَانِكَ فَإِنَّهَا مِنْ عَطَائِكَ وَفَضْلِكَ
উচ্চারণ:
ইয়া হাদিয়াদ দ্বাল্ল, ওয়া রাদ্দাদ দ্বাল্লাহ, উরদুদ আলাইয়া দ্বাল্লাতি, বিইজ্জাতিক ওয়া সুলতানিকা; ফাইন্নাহা মিন আত্বায়িকা ওয়া ফাদলিক।
অর্থ:
হে পথভ্রষ্টদের পথপ্রদর্শক এবং হারানো জিনিস ফিরিয়ে দেওয়াকারী, আপনার সম্মান ও শক্তির মাধ্যমে প্রার্থনা করছি—আমার হারানো বস্তুটি ফিরিয়ে দিন। এটি আপনার দান ও অনুগ্রহ।
দোয়ার গুরুত্ব কী বলে হাদীস?
- সহিহ বুখারিতে (হাদিস ৬৩৪০) হযরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত: “তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল হয়, যতক্ষণ না সে তাড়াহুড়া করে এবং বলে—‘আমি তো দোয়া করেছি, কিন্তু কবুল হলো না।’”
- তিরমিজির একটি হাদীসে হযরত জাবির (রা.) বলেন: “যখন কেউ আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে তা দেন, অথবা তার বদলে কোনো বিপদ প্রতিহত করেন—যতক্ষণ না সে পাপ বা আত্মীয়তা ছিন্ন করার জন্য দোয়া করে।”
- আরেক হাদীসে, রসুল (সা.) বলেন: “যে ব্যক্তি চায় যে দুঃসময়ে তার দোয়া কবুল হোক, সে যেন সুসময়ে বেশি বেশি দোয়া করে।” (তিরমিজি, ৩৩৮২)
- তিরমিজি ও সহিহাহ হাদীসে হযরত সালমান (রা.)-এর বর্ণনায় বলা হয়েছে: “দোয়া ছাড়া আর কিছুই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে না, আর নেক আমল ছাড়া আর কিছুই আয়ু বৃদ্ধি করে না।” (তিরমিজি ২১৩৯, সহিহাহ ১৫৪)