ট্রাম্পের মন্তব্য: ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার খবর ‘ফেক নিউজ’

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি গণমাধ্যমে ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার কথিত প্রস্তাবকে “ফেইক নিউজ” আখ্যা দিয়ে তা সরাসরি নাকচ করেছেন। শনিবার (২৮ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “আমি এমন হাস্যকর ধারণা আগে কখনও শুনিনি। এটা পুরোপুরি ভুয়া খবর। মিডিয়া আমাকে হেয় করতে এসব চালাচ্ছে।”

এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে দাবি করে, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে ইরানকে শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির জন্য নিষেধাজ্ঞা শিথিল এবং প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়ার একটি সম্ভাব্য পরিকল্পনা বিবেচনায় রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, যিনি ২০ জুন হোয়াইট হাউসে উপসাগরীয় মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

আলোচনার প্রেক্ষাপট

সাম্প্রতিক সময়ে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এই আলোচনার সূত্রপাত। ইসরাইলের সামরিক হামলার জবাবে ইরান পাল্টা আক্রমণ চালায়। এতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। এর মধ্যেই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ট্রাম্প। পরে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ইরানকে আলোচনায় টানার কৌশলের অংশ হিসেবেই এই প্রস্তাব উঠে আসে বলে দাবি করা হয়।

পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রস্তাব

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচনায় উঠে এসেছে ‘নন-এনরিচমেন্ট সিভিল নিউক্লিয়ার প্রোগ্রাম’ বিষয়ক একটি পরিকল্পনা, যার আওতায় ইরানে নতুন একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এতে সরাসরি অর্থায়ন না করলেও, নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র। মূল বিনিয়োগ আসবে আরব মিত্র দেশগুলো থেকে।

নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ইঙ্গিত

চলমান প্রক্রিয়ায় ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং বিদেশি ব্যাংকে আটকে থাকা প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলারের অর্থ মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।

ট্রাম্পের মিশ্র বার্তা

এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প একদিকে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও অন্যদিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন, “আলোচনা আগামী সপ্তাহে শুরু হতে পারে। তবে চুক্তি হোক বা না হোক, আমি তা নিয়ে চিন্তিত নই।”

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধরনের চুক্তির মূল লক্ষ্য হলো ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথ থেকে বিরত রাখা এবং মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, “টেকসই শান্তি অর্জন করতে হলে ইরানকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।” তিনি মনে করেন, দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরনের সংঘাত এড়াতে একটি সুনির্দিষ্ট সমঝোতা প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *