মহান আল্লাহতায়ালা মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে সৃষ্টি করেছেন। মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ। এর মধ্যে চুল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা মানুষকে সৌন্দর্য ও মর্যাদায় বিশেষভাবে আলাদা করে তোলে। যারা চুল হারান, তারাই ভালো জানেন এর মূল্য কতটা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন:
“নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, স্থলে ও সাগরে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি, তাদের উত্তম রিজিক দিয়েছি এবং আমি যাদের সৃষ্টি করেছি, তাদের অধিকাংশের উপর তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি।” (সুরা ইসরা: আয়াত ৭০)
চুল ফেলা বা সংরক্ষণে ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি
অনেক সময় প্রয়োজনবশত চুল কাটা হয় বা স্বাভাবিকভাবে ঝরে পড়ে। তবে ইসলামic আদর্শ অনুযায়ী এসব চুল যত্রতত্র ফেলা অনুচিত। এতে করে এটি একদিকে আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতের অবমাননা হয়, অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি হয়। চুল বাতাসে উড়ে খাবারে বা পানিতে মিশে যেতে পারে, যা রোগ ছড়াতে পারে।
চিকিৎসা ও ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, চুল বা নখ কাটার পর সেগুলোর যথাযথ সংরক্ষণ জরুরি। শরিয়ত অনুযায়ী এগুলো দাফন করাই উত্তম ও সুন্নাতসম্মত পদ্ধতি।
চুল বিক্রির বিষয়ে ইসলামিক নির্দেশনা
বর্তমানে অনেকেই কাটা চুল বিক্রি করে থাকেন। তবে ইসলামিক শরিয়তের আলোকে এটি স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ (হারাম)। শরিয়ত চুল বা দেহের কোনো অঙ্গ ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিক্রি করতে সমর্থন করে না।
চুল ও দেহের অন্যান্য অংশ দাফনের বিষয়ে দলিল
সুরা মুরসালাত-এর ২৫-২৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন:
“আমি কি পৃথিবীকে করি না ধারণকারিণী, জীবিত ও মৃতদের জন্য?”
এই আয়াত থেকে আলেমগণ মত দেন যে, শুধু মানুষের দেহ নয় বরং তার কাটা চুল, নখসহ অন্যান্য অংশও যথাযথভাবে দাফন করাই শরিয়তের শিক্ষা।
ইমাম আহমদ (রহ.)-কে চুল ও নখ ফেলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,
“দাফন করে ফেলো।”
তিনি আরও বলেন, “আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) চুল ও নখ দাফন করতেন।” (আল মুগনি, ইবনে কুদামা: ১/১১০)