প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বিদেশ ভ্রমণে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশের সকল প্রবেশপথে (স্থল, নৌ ও বিমানবন্দর) হেলথ স্ক্রিনিং এবং নজরদারি জোরদার করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ সোমবার এ সতর্কতা জারি করা হয়। এতে বলা হয়, ভারতের পাশাপাশি অন্যান্য কিছু দেশে করোনার নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট—বিশেষ করে অমিক্রনের এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এনবি ১.৮.১—এর সংক্রমণ বাড়ছে। এই ভ্যারিয়েন্টগুলো আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
করোনা প্রতিরোধে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে:
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্ভাব্য সংক্রমণ রোধে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে:
✅ জনসাধারণের জন্য স্বাস্থ্য নির্দেশনা:
- দিনে একাধিকবার সাবান-পানিতে অন্তত ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।
- নাক-মুখ ঢাকতে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
- আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
- অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ না করতে বলা হয়েছে।
- হাঁচি বা কাশির সময় বাহু, টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিতে হবে।
✅ সীমান্ত ও বন্দরে বাড়তি সতর্কতা:
- দেশের সব বিমানবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে IHR (International Health Regulations) ডেস্কে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- থার্মাল স্ক্যানার ও ডিজিটাল হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হবে।
- স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পিপিই, মাস্ক ও গ্লাভস সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
- সকল প্রবেশপথে করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
⚠️ ভ্রমণে সতর্কতা:
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারতসহ সংক্রমিত দেশগুলোতে ভ্রমণ এড়িয়ে চলা উচিত। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে।
সন্দেহভাজন রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়:
- অসুস্থ বোধ করলে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে নিকটবর্তী হাসপাতালে দ্রুত যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
- রোগীকে অবশ্যই মাস্ক পরতে উৎসাহিত করতে হবে।
- জরুরি প্রয়োজনে আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগের আহ্বান: ০১৪০১-১৯৬২৯৩
দেশে নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত
সম্প্রতি আইসিডিডিআরবি’র গবেষণায় দেশে করোনার এক্সএফজি এবং এক্সএফসি নামক নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, যেগুলো মূলত অমিক্রনের জেএন-১ ধরনের উপধরন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের সংক্রমণ এখনই আশঙ্কাজনক পর্যায়ে না পৌঁছালেও প্রস্তুতি নিয়ে রাখা জরুরি।
