সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে পরাজয়ের পরও গ্যালারিভর্তি দর্শকের কণ্ঠে ছিল একই সুর—“বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!” ম্যাচ শেষে রাকিব হোসেনের কণ্ঠে ঝরে পড়া আক্ষেপ, “আজ আমরা দর্শকদের জন্য কিছুই করতে পারিনি,” যেন সেই সমর্থনের প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রতিচ্ছবি। হারের পরও গ্যালারির গর্জনে প্রমাণ মিলেছে—ফুটবলের হারানো ঐতিহ্য ফিরতে শুরু করেছে।
গ্যালারিভর্তি দর্শক, উন্মাদনার নতুন রূপ
এক সময় বাংলাদেশের ফুটবল মানেই ছিল টিভি পর্দায় চোখ রেখে বসে থাকা ক্রীড়ামোদীরা। তবে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিক অবনতিতে সেই আগ্রহে ভাটা পড়ে। এখন দৃশ্যপট বদলাচ্ছে। হামজা চৌধুরী, সমিত সোম, ফাহমিদুল ইসলাম প্রমুখ নতুন প্রজন্মের তারকারা যেন নতুন করে ফুটবলের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন।
আজ (১০ জুন) সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচ ঘিরে যে উৎসাহ ছিল, তা বহুদিন পর দেখা গেছে। ভরা গ্যালারি, দাঁড়িয়ে দেখা হাজারো দর্শক—সবই ইঙ্গিত দিচ্ছে ফুটবলের পুনর্জাগরণের।
মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, মন জয়ে লড়াই
ম্যাচের শুরু থেকে বেশ কিছু আক্রমণ করলেও প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি হাভিয়ের ক্যাবরেরার দল। উল্টো শেষ মুহূর্তে সিঙ্গাপুরের উই ইয়াং গোল করে এগিয়ে দেয় দলকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আরও একটি গোল হজম করে বাংলাদেশ।
তবে ম্যাচের শেষ আধা ঘণ্টায় দৃশ্যপট বদলে যায়। র্যাঙ্কিংয়ে ২১ ধাপ এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণে জর্জরিত করে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে হামজার অ্যাসিস্টে রাকিবের গোলে ব্যবধান কমায় লাল-সবুজরা। এরপর একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে চেষ্টা চালায় সমতা ফেরানোর, যদিও কাঙ্ক্ষিত গোলটি আর আসেনি।
হারের পরও আশার আলো
শেষ মিনিট পর্যন্ত মাঠে লড়াই করে যাওয়া খেলোয়াড়দের জন্য গ্যালারি ভরিয়ে রাখে দর্শকদের করতালি। এই সাহসী ফুটবল, এই হার না মানা মানসিকতাই যেন ফুটবলের নতুন বাংলাদেশকে চিহ্নিত করছে।
রাকিব হোসেন জানিয়েছেন, “দর্শকদের এমন ভালোবাসা আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করে। আমরা হংকংয়ের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তুত।”